কাজল নদী_Written By Tumi_je_amar [ষষ্ঠ পরিচ্ছদ – সবাইতো সুখী হতে চায় (চ্যাপ্টার ০৮ - চ্যাপ্টার ১৪)]

🔗 Original Chapter Link: https://chotiheaven.blogspot.com/2015/10/written-by-tumijeamar_83.html

🕰️ Posted on October 31, 2015 by ✍️ Tumi_je_amar

📖 3893 words / 18 min read


Parent
কাজল নদী Written By Tumi_je_amar ষষ্ঠ পরিচ্ছদ – সবাইতো সুখী হতে চায় (#০৮) পরদিন সোমবার মানসী বেরনোর পরেই দীপ্তি ওর পেছন পেছন যায়। ভাস্করকে দেখে কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই চিনতে পারে না। দীপ্তি আড়াল থেকে খেয়াল করে যে ওরা কি কি করে। ওর খুব ইচ্ছা করছিল ওরা কি বলছে সেটা শোনে কিন্তু কাছে যেতে পারে না ধরা পড়ে যাবার ভয়ে। একটু পড়ে দীপ্তি ওখান থেকে চুপ চাপ চলে আসে। কাউকে কিচ্ছু বলে না। বুধবার সৃজা আসে ওদের বাড়ি। দীপ্তি সৃজাকে সব বলে। ও আর কাউকে বলতে সাহস পাচ্ছিল না। সৃজা বলে যে শুক্রবারে ও দীপ্তির সাথে রাঙ্গাপির পেছন পেছন যাবে। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে দীপ্তি আর সৃজা ওই মাসীর দোকানে যায়। ওরা নিজেদের পরিচয় দেয়। কিন্তু মাসী কিছুতেই কিছু বলে না। দীপ্তি অনেক ভরসা দেবার পরে মাসী কিছু বলে। মাসী – আমি বুঝিনা বাপু তোমাদের ব্যাপার স্যাপার। এতো বড় মেয়ে এখনও বাড়ি থেকে বিয়ে দেয়নি। সৃজা – দিদা আমি বুঝি কিন্তু তোমাকে বলতে পারবো না মাসী – তবে আমিও কিছু বলবো না দীপ্তি – মাসী তুমি চাও কিনা রাঙ্গাদির বিয়ে হয়ে যাক মাসী – রাঙ্গাদি আবার কে ? দীপ্তি – মানসী দিদি কে আমরা সবাই রাঙ্গাদি বলি। আমি আর এই স্রিজাও চাই রাঙ্গাদির বিয়ে হয়ে যাক। কিন্তু আমাদের বাড়িতে একজন আছে সে চায় না। মাসী – একজনের জন্যে আটকে আছে ! সৃজা – তিনিই সবার গার্জেন মাসী – এ আবার কিরকম গার্জেন ! দীপ্তি – অনেক সমস্যা আছে মাসী।  তারপর মাসী যা যা দেখেছে ওদের বলে।  দীপ্তি – অনেক ধন্যবাদ মাসী। আমরা এবার ঠিক রাঙ্গাদির বিয়ে দিয়ে দেব। মাসী – দেখো বাপু অইসব ধন্যবাদ তোমাদের মত বড় মানুসের ভাষা। আমরা গরিব লোক, আমরা কথা বুঝি না, আমরা শুধু মন বুঝি। মেয়েটাকে দেখে ভাল লাগে, তাই ওকে ভালবাসি। আর চাই ওর একটা হিল্লে হয়ে যাক। সৃজা – আর ছেলেটা ? মাসী – ছেলেটাও খুব ভাল। তোমাদের রাঙ্গাদিকে খুব খুব ভালবাসে। সৃজা – ছোট কাকি এবার দেখো কেউ আটকাতে পারবে না আমাকে। রাঙ্গাপির বিয়ে দিয়েই ছাড়বো।  দীপ্তি – মাসী রাঙ্গাদিকে কিছু বলবেন না যে আমরা এসেছিলাম।  পরদিন শুক্রবার মানসী ভাস্করের সাথে দেখা করে, চা খেয়ে, চুমু খেয়ে উঠতে যাবে, দেখে সামনে সৃজা আর দীপ্তি দাঁড়িয়ে। (#০৯) মানসী সৃজা আর দীপ্তিকে দেখে একটু থতমত খেয়ে যায়। কি করবে ভেবে পায় না। তারপর হেসে ওঠে। মানসী – কি দেখতে এসেছিস তোরা ? সৃজা – আমার রাঙ্গা পিসেকে দেখতে এসেছি মানসী – সেটা আবার কে ? দীপ্তি – বেশী নকশা করোনা, তুমি আমাদের কাছে লুকিয়ে রাখতে পারলে ? সৃজা – রাঙ্গাপি এটা তুমি মোটেও ভাল করো নি। মানসী – আমি করলাম টা কি ! দীপ্তি – এখনও লজ্জা ? মানসী – লজ্জা কোথায় পেলাম ! সৃজা – (ভাস্করের দিকে তাকিয়ে) – এইযে পিসেমশায় তোমার নাম কি ? ভাস্কর – আমার নাম ভাস্কর, কিন্তু আমি তোমার পিসেমশায় কি করে হলাম ! সৃজা – এটা আমার রাঙ্গাপিসি, তাই তুমি পিসেমশায় ভাস্কর – এখনও বিয়ে করিনি দীপ্তি – করোনি, কিন্তু করতে তো চাও। বিয়েতো একটা বাহানা মাত্র।  ভাস্কর – সেটা চাই, এখন তোমার রাঙ্গা দিদি চাইলেই হয় সৃজা – কি রাঙ্গাপি তুমি একে বিয়ে করবে না ? মানসী – আমি চাইলেই কি আর হবে ? সৃজা – আমি আজকেই বাবাকে বলবো, দেখো তোমার ঠিক বিয়ে হয়ে যাবে। মানসী – না না সোনা, বড়দাকে বলিস না। বড়দা একে পছন্দ করে না। সৃজা – বাবা এনাকে জানলো কি ভাবে ? মানসী – এই ভাস্করকেই দাদা স্বপনের বাড়িতে দেখেছিলো আর বিয়েতে মত দেয়নি।  দীপ্তি – সেতো আমরা জানি। কিন্তু এই ভাস্করদার সাথে তোমার যোগাযোগ আছে সেটা তো বলোনি ! মানসী – একদিন তোকে ঠিক বলতাম। কিন্তু সৃজা দাদাকে এখনই কিছু বলিস না। সৃজা – এখন বলবো না তো কি তোমার বয়েস ৬০ হয়ে গেলে বলবো ?  মানসী – আমি পরে বলবো। এইসব তোকে ভাবতে হবে না। সৃজা – তুমি কি বলবে বা করবে আমি জানি। বাবাকে বলতে গেলেই শাড়িতে হিসি করে ফেলবে। মানসী – মারবো এবার তোকে দীপ্তি – কিন্তু আমরা জানি তুমি বড়দাকে বলতে পারবে না মানসী – আর একটু সময় দে ঠিক বলবো  সৃজা – তুমি চিন্তা করোনা পিসেমশায়, খুব তাড়াতাড়িই তোমাদের বিয়ে হয়ে যাবে। (#১০) রাত্রে বড়দা একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরেন। তারপর সব ভাই বোনরা ফিরলে সবাইকে একসাথে ডাকেন। সবাই আসলে উনি বলেন যে উনি এবার বিয়ে করতে চান।  মা (বড়দার) – এই বয়েসে বিয়ে করবি বাবা ! বড়দা – মা, সৃজার বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। সব ভাই বোনরাও দাঁড়িয়ে গেছে। আমার এখন আর কি কাজ। তোমার বৌমা মারা যাবার পর থেকে একাই আছি। ব্রততী আমার জন্যে ২০ বছর ধরে অপেক্ষা করছে। এবার ওর সাথে বিয়েটা করেই নেব। মেজ ভাই – তুমি বিয়ে করলে আমার কোন আপত্তি নেই ছোট ভাই – আমিই বা কি বলবো মানসী – হ্যাঁ হ্যাঁ দাদা তুমি এবার বিয়ে করেই নাও। তুমি বিয়ে করলে খুব ভাল হবে। সৃজা – তোমার সব কাজ হয়ে গেছে ? বড়দা – কেন মা আর কি বাকি আছে ? সৃজা – রাঙ্গাপির বিয়ে কে দেবে ? বড়দা – মানসীর বিয়ে দিতে পারিনি কিন্তু ওর জন্যে বিউটি পার্লার করে দিয়েছি। ও তো বেশ ভালই আছে। সৃজা – তোমার চোখ আছে ? বড়দা – সে আবার কি ? সৃজা – তোমার চোখ থাকলে দেখতে পেতে রাঙ্গাপি কেমন আছে। আর পার্লার তুমি করে দাও নি। আমার মায়ের পয়সা আর স্বপন পিসের বুদ্ধিতে হয়েছে। বড়দা – যে ভাবেই হোক ঠিক তো চলছে। সৃজা – কি ঠিক চলছে ? রাঙ্গাপি পার্লার চালায় আর তুমি মাসে দশ হাজার টাকা করে আয় করো। রাঙ্গাপির কি হয় ? বড়দা – আমরা তো সবাই একসাথে থাকি। সবার পয়সা কি আলাদা ? মানসী – সৃজা বাবার সাথে এইভাবে কেউ কথা বলে না। সৃজা – বাবা যদি বাবার মত কথা বলে তবে আমার এইভাবে কথা বলার দরকার হত না। মেজ ভাই – আমি সৃজার কথা সাপোর্ট করছি। আমরা দুই ভাই যে ব্যবসা করি তার সব পয়সা তো তোমাকে দেই না। সংসার চালানোর যতটা লাগে ততোটা দেই। তবে মানসীর সব পয়সা তুমি কেন নেবে ? সৃজা – আমার কথা হল রাঙ্গাপির গত সাত বছরে পার্লার থেকে যত আয় হয়েছে সেই টাকা তুমি রাঙ্গাপিকে দিয়ে দেবে। আর রাঙ্গাপির বিয়ে দেবে। তার পর তুমি যা খুশী করতে পারো। বড়দা – মানসী বিয়ে দেবার দায়িত্ব বাবার ছিল। কিন্তু সেটা দেবার আগেই উনি চলে গেছেন। মেজ ভাই – দাদা তুমি এইকথা বলতে পারো না। বাবা থাকতেও আমাদের বিয়ের সব ব্যবস্থা তুমিই করেছ। আমাদের বা বাবার মত নাও নি। বড়দা – তোমাদের অমতে তো বিয়ে দেইনি। ছোট ভাই – আমরা সব সময় তোমার কথা শুনে চলি। মানসী – তোমরা কি শুরু করেছো ? আমার কোন টাকা চাই না। দাদা তুমি বিয়ে করে নাও। সৃজা – রাঙ্গাপি তুমি কি রকম মানুষ ? আমি তোমার মত আর কাউকে দেখিনি, যে নিজের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে না। মা – আমার মানসী মোমবাতির মত, নিজে জ্বলে গিয়ে বাকি সবাইকে আলো দেয়। হ্যাঁ বাবা তুই মানসীর বিয়ে দিয়ে নিজে বিয়ে কর। এই তর্ক বিতর্ক অনেক রাত পর্যন্ত চলে। কিন্তু কেউ বড়দাকে থামাতে পারে না। বড়দা বলে উনি পরের সপ্তাহেই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করছেন। সেইভাবে নোটিশও দেওয়া হয়ে গেছে।  সৃজা – তবে তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। মানসী – সৃজা বড় বেশী পেকে গেছ তুমি। সৃজা – ঠিক আছে স্বপন পিসে আর শ্রদ্ধা পিসেকে ডাকো। ওদের সাথে কথা বল।  মা – না না জামাইদের এর মধ্যে ডাকতে হবে না। মানসী – দাদা তুমি বিয়ে করে নাও। আমি সৃজাকে বুঝিয়ে দেব। সৃজা – তুমি আমাকে বুঝিয়ে দেবে কিন্তু ভাস্কর পিসেমশায়কে কি বলবে ? বড়দা – এই ভাস্কর কে ? সৃজা – তুমি তো শুধু তোমার বউ নিয়ে পরে আছো। রাঙ্গাপি তোমার কাছে শুধুই কাজের মানুষ। তার ভালবাসার কোন খবর তোমার রাখার দরকার নেই। বড়দা – মানসী কে এই ভাস্কর ? মানসী – কেউ না দাদা। ও কথা ছাড়। সৃজা – কেন ছাড়বে ? ভাস্কর পিসে হল সেই মানুষ যার সাথে স্বপন পিসে রাঙ্গাপির বিয়ে দিতে চেয়েছিল। বড়দা – সেই অপদার্থ ছেলেটা ? সৃজা – তোমার কাছে সবাই অপদার্থ ! তুমি পয়সা ছাড়া আর কিছু বোঝো নাকি ! মানসী – আঃ সৃজা, কি হচ্ছে টা কি ? বড়দা – ওই ভাস্করের মত বেকার ছেলের সাথে আমার বোনের বিয়ে হতে পারে না। সৃজা – গত কুড়ি বছরে তুমি একটাও সাকার ছেলে খুঁজে পাওনি। বড়দা – খুজেছি, পাইনি সৃজা – শ্রেপির জন্যে পেলে, আমার জন্যে পেলে, দেশের আরও কত জনের বিয়ে দিলে আর রাঙ্গাপির জন্যে ছেলে পেলে না। এটা বিশ্বাস করতে বল ? তুমি আসলে কোনদিন চাওনি রাঙ্গাপির বিয়ে হোক। মা – কেন চাইবে না ? সৃজা - ঠাম্মা তুমি সরল মানুষ, তুমি বুঝবে না।  মানসী – তোমাকে আর বোঝাতে হবে না। সৃজা – তুমি কাল ভাস্কর পিসেকে নিয়ে এখানে আসবে। সবাইকে বলবে কবে বিয়ে করছ। মানসী – না না তা হয় না। বড়দা – মানসীর বিয়ে কিছুতেই ভাস্করের সাথে হবে না। আর মানসী ভাস্করকে বিয়ে করলে আমাদের সাথে কোন সম্পর্ক থাকবে না। সৃজা – কেন ? মানসী – সবাই দয়া করে চুপ করবে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।  মানসী উঠে চলে যায়। না খেয়েই শুয়ে পড়ে। সৃজা গিয়ে অনেক বার খাবার জন্য ডাকে কিন্তু মানসী ওঠে না। বাকি সবাইও যে যার মত ঘরে চলে যায়। দীপ্তি আর লেখা সবার কথাই শোনে কিন্তু ওরা কিছু বলে না। পরদিন দীপ্তি স্বপনকে অফিসে ফোন করে সব জানায়। স্বপন সব শোনার পড়ে বলে যে বড়দা বিয়ে করছে সেটা খুব ভাল কথা। দীপ্তি বলে যে শনিবারে ও সৃজা আর মানসীকে নিয়ে স্বপনের বাড়ি যাবে। (#১১) শনিবার সকালে ওরা তিনজনে স্বপনের বাড়ি যায়। মানসী যেতে চাইছিল না। কিন্তু সৃজা জোর করে নিয়ে যায়। স্বপন সেদিন আর অফিস যায়নি। স্বপনের বাড়ি পৌঁছেই সৃজা হাউ মাউ করে স্বপনের কাছে বাবার নামে নালিশ করতে শুরু করে। ও যে কি বলছিল স্বপন কিছুই বোঝে না। সৃজা থামলে স্বপন দীপ্তিকে বলে, “এবার বল কি হয়েছে ।” সৃজা – এতক্ষন আমি কি বললাম স্বপন – তুই হুর হুর করে কি বললি কিছুই বুঝলাম না সৃজা – আমার ভীষণ রাগ হচ্ছে। কিন্তু তুমি ছাড়া আর কারো কাছে বলতে পারছি না স্বপন – আমি কি তোর বাবাকে বকে দেব না তোর বাবা আমার কথা শুনবে সৃজা – না তুমি বকবে না। কিন্তু জান বাবা শুধু তোমাকেই ভয় পায়। স্বপন – হ্যাঁ দীপ্তি বলো ঠিক কি হয়েছে। দীপ্তি সেদিন যা যা কথা হয়েছে সব বলে। স্বপন – বড়দা বিয়ে করবে সেতো ভাল কথা সৃজা – তোমার রাগ হচ্ছে না ? স্বপন – কেন রাগ হবে ? সৃজা – রাঙ্গাপির বিয়ে না দিয়ে নিজে আবার বিয়ে করছে ! স্বপন – রাঙ্গাদির বিয়ে দিচ্ছে না সেটা ওনার নিজের বিয়ের থেকে আলাদা সৃজা – কেন আলাদা ? স্বপন – বড়দা একটু দাদাগিরি করে, শুধু টাকা চেনে। সব মেনে নিলাম। কিন্তু উনি রাঙ্গাদির বিয়ে দেওয়া ছাড়া বাড়ির বাকি সব দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই না ? মানসী – হ্যাঁ দাদা সব কিছুই করেছে স্বপন – সৃজা তুই বল সৃজা – হ্যাঁ সেসব করেছে স্বপন – তোর বাবার কাছে সাহায্য চেয়ে পাসনি সেরকম কখন হয়েছে ? সৃজা – না হয় নি দীপ্তি – সে দিক থেকে বড়দা আমাদের বাড়ির সত্যিকারের গার্জেন। স্বপন – ওনার কোন খারাপ অভ্যেস আছে ? সৃজা – না, মদ বা সিগারেট খায় না। স্বপন – মেয়েদের নিয়ে ঘোরে ? সৃজা – আমরা দেখিনি বা জানিনা স্বপন – সৃজা তোর কত দিন বিয়ে হয়েছে ? সৃজা – এক বছর হল প্রায় স্বপন – তুই মানব কে ছাড়া আর সেক্স ছাড়া থাকতে পারবি ? সৃজা – বেশীদিন পারবো না স্বপন – এখন সেক্স কেমন লাগে ? সৃজা – খুব ভাল স্বপন – বিয়ের আগে তোর সেক্স নিয়ে এই অ্যাডিকসন ছিল ? সৃজা – বিয়ের আগে সেক্স জানতাম। কিন্তু তার কি মজা সেটা তো জানতাম না। স্বপন – আর এখন সৃজা – এখন সারাদিন মনে হয় কখন রাত্রি হবে আর মানবের কাছে যাবো। কিন্তু পিসে তুমি ভীষণ অসভ্য আমাকে দিয়ে কিসব বলিয়ে নিলে। আর আমার আসল কথা ভুলে গেলে। স্বপন – না না ভুলিনি। এবার বল বড়দার কতদিন হল একা আছেন ? সৃজা – মা প্রায় ২০ বছর হল মারা গেছেন স্বপন – বড়দা এতদিন সেক্স ছাড়া আছেন সৃজা – হ্যাঁ তাই স্বপন – বড়দা চাইলে আগেও বিয়ে করতে পারতেন  মানসী – বড়দাকে অনেকে অনেকবার বলেছে বিয়ে করবার জন্যে। কিন্তু দাদা মেয়ের বিয়ে না দিয়ে কোন কিছু ভাবেন নি। স্বপন – রাঙ্গাদি কোনদিন সেই ভাবে সেক্সের স্বাদ পায়নি। কিন্তু সৃজা আর দীপ্তি তোমরা পারবে ২০ বছর সেক্স ছাড়া থাকতে ? দীপ্তি – না পারবো না সৃজা – ভীষণ কষ্ট হবে স্বপন – বাঘ রক্তের স্বাদ পেলে রক্ত ছাড়া থাকতে পারে না, সেটা বুঝিস ? সৃজা – হ্যাঁ জানি স্বপন – তোর বাবা তোর জন্যে এই ২০ বছর সেই কষ্ট করেছেন  সৃজা – হ্যাঁ মেনে নিচ্ছি বাবা আমার জন্যে খুব কষ্ট করেছেন স্বপন – বড়দা এই মেয়েটাকে ১৫ বছরের বেশী ধরে জানেন আর ভালবাসেন। কিন্তু ওই ব্রততীও তোর বাবার কোথায় এতদিন বিয়ে না করে আছে। সৃজা – তুমি কি করে জানলে ? স্বপন – আমি আর নিহারিকা দেখেছি বড়দাকে ওই মেয়েটার সাথে। মানসী – আমাদের বলো নি তো স্বপন – কেন বলবো সবাইকে। ওনার পার্সোনাল জীবনে দখল দেবার কোন অধিকার আমার নেই সৃজা – সত্যি পিসে আমরা কেউ এই ভাবে চিন্তা করিনি দীপ্তি – কিন্তু বড়দা এতদিন রাঙ্গাদির বিয়ে কেন দেননি ? স্বপন – আমার মনে হয় শুরুর দিকে সেটা সৃজাকে মানুষ করার জন্যে। বৌদি মারা যাবার পরে বড়দার কাছে দুটো অপশন ছিল, মানসী বা শ্রেয়সী – দুজনের একজন সৃজাকে দেখবে। উনিও জানেন যে শ্রেয়সী কোন কাজের মেয়ে না। তাই ওর বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। আর মানসীকে সৃজার দায়িত্ব দিয়েছেন। দীপ্তি – কিন্তু আমি আর লেখা দিদি আসার পরে ? স্বপন – তোমরা আসার পরে উনি জানতেন এক দিন না একদিন তোমাদের বাচ্চা হবে। আর তোমাদের নিজেদের বাচ্চা হলে তোমরা সেইভাবে সৃজার ওপর খেয়াল রাখতে পারবে না। তাই যতদিন না সৃজার বিয়ে হয় উনি নিজের সাথে সাথে মানসীকে আর ব্রততীকে বিয়ে করতে দেন নি। সৃজা – পিসে সাংঘাতিক অ্যানালিসিস তোমার দীপ্তি – কিন্তু এখন ? স্বপন – এখন মানসীর টাকা। উনি আর সব কিছু ছাড়তে পারবেন, টাকা ছাড়তে পারবেন না। সৃজা – সেটা তো অন্যায় স্বপন – সেটা অবশ্যই ঠিক কাজ নয়। কিন্তু তার জন্যে ব্রততীকে বঞ্চিত করা ঠিক হবে না।  দীপ্তি – তবে আমরা কি করবো স্বপন – মনের আনন্দে বড়দার বিয়ের জোগাড় করো সৃজা – তারপর ? স্বপন – দেখো রাঙ্গাদিদি অনেক বড় হয়েছে। আমি অনেক বার বুঝিয়েছি। এবার ওর নিজের স্বার্থ নিজে দেখার সময় এসেছে। রাঙ্গাদিকে ওর পয়সা নিজে চাইতে হবে বড়দার কাছে। দীপ্তি – রাঙ্গাদি কোনদিন পারবে না। আমি কতদিন হিসাব করে দেখিয়ে দিচ্ছি ওর কত টাকা আছে বড়দার কাছে। মানসী – আমার দাদা আমাকে কোনদিন ফেলে দেবে না স্বপন – সেটা আমিও জানি। কিন্তু আমরা সবাই মানুষ, সবাইকে একদিন না একদিন যেতেই হবে। যেদিন বড়দা থাকবেন না তখন কি হবে তোমার ? মানসী – তোমার কাছে এসে থাকবো। স্বপন – সে এখনও থাকতে পারো। কিন্তু তোমাকে তোমার বোনের দয়ায় বেঁচে থাকতে হবে। নিহারিকা – মোটেও না। আমি সেরকম নই। স্বপন – জীবন টা গল্পের বই নয় যে লেখক লিখে দিলেন ওরা সুখে শান্তিতে সংসার করতে থাকল, আর সবাই সুখে থাকল। সত্যিকারের জীবনে অনেক কিছু হয়, যেটা দেখে আমাদের ভয় লাগে, হয়ত আমার সুখ নষ্ট হবে! আর আমরা সবাই সুখী হতে চাই। সুখের জায়গায় আমরা কেউ কোন কম্প্রোমাইজ করি না। তাই ভবিস্যতে কি হবে আর আমারাই বা কোন অবস্থায় কি করবো আমরা নিজেরাও জানি না। (#১২) সৃজা স্বপনকে জড়িয়ে ধরে। ওর বুকের মধ্যে মুখ চেপে থাকে অনেকক্ষণ। তারপর আবার উঠে বসে। সৃজা – আর বলো স্বপন – এতক্ষন এটা কি করলি ? সৃজা – এটা আমাদের মাথাকে একটু ব্রেক দিলাম। আর তোমাকে ভালবাসা জানালাম। কিন্তু এই ভালবাসার ইংরাজি Love নয়, এই ভালবাসার ইংরাজি Gratitude. স্বপন – সত্যি অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস তুই মানসী – সৃজা বুঝতে পারছিস আমি কেন স্বপনকে এতো ভালবাসি সৃজা – সেই জন্যেই আজকে আমিও পিসের কাছেই এসেছি। আর কারো কাছে যাই নি। দীপ্তি – কিন্তু রাঙ্গাদি কি কিছু বলবে বড়দা কে ? স্বপন – না বললে নিজে ভুগবে। আমরা কি করবো ! সৃজা – আমরা সবাই চুপ চাপ থাকবো ? স্বপন – দেখ রাঙ্গাদির বিয়ে দেবোই, আর ওই ভাস্করের সাথেই দেবো। ওদের আর একটু তৈরি হতে দে। বড়দার বিয়ের সাথে রাঙ্গাদির বিয়ের কোন সম্পর্ক নেই। রাঙ্গাদির বিয়ে যখন হবার ঠিক হবে। দীপ্তি – ঠিক বলছ ? মানসী – স্বপন যখন বলেছে তখন ঠিক হবে।  নিহারিকা – অনেক কথা হল। এবার সবাই জলখাবার খেয়ে নাও। সৃজা – কি বানিয়েছ নেহাপি ? নিহারিকা – আমি চাউমিন বানিয়েছি আর তোর পিসে চিলি চিকেন বল বানিয়েছে। নিহারিকা সবাইকে খেতে দেয়। সৃজা খুব খুশী, মানসী আর দীপ্তিরও ভাল লাগে। সৃজা – কি সুন্দর খেতে এই চিকেন বল। কিভাবে বানালে ? স্বপন – কেন বলবো তোকে ? সৃজা – বলো না প্লীজ, মানবকে বানিয়ে খাওয়াবো স্বপন – হাড় ছাড়া চিকেন একটু সেদ্ধ করবি। একটু ছোলার ডাল ভিজিয়ে রাখবি। তারপর জল ঝড়িয়ে ডাল আর চিকেন একসাথে মিক্সিতে পিসে নিবি। তারপর কাঁচা ডিম আর পেঁয়াজ কুচি দিয়ে মাখাবি। গোল গোল বল করে অল্প ভেজে নিবি। তারপর যেভাবে চিলি চিকেন করিস সেইভাবে বানিয়ে নিবি, শুধু চিকেন এর জায়গায় এই চিকেন বল দিবি। সৃজা – সোজা তো স্বপন – আমি কখন বললাম কঠিন দীপ্তি – শুনতে সোজা, করে দেখ না কত ঝামেলা হয়। নিহারিকা – খাওয়া হলে চল একটু ঘুরে আসি। সৃজা – কোথায় যাব ? নিহারিকা – চল না গেলেই দেখতে পাবি। রাঙ্গাদি কোথায় ভাস্করের সাথে প্রেম করত সেই জায়গা দেখাবো। জলখাবার হয়ে গেলে নিহারিকা ওদেরকে নিয়ে একটু ঘুরতে যায়। নিহারিকা শুধু দীপ্তি কে বলে ঘরে থাকতে। নিহারিকা – না দীপ্তি বৌদি তোমাকে নিয়ে যাবো না। দীপ্তি – আমি কি দোষ করলাম ? নিহারিকা – স্বপন যাবে না, ও দুপুরের রান্না করবে। তুমি ওর সাথে থাকো। মানসী – হ্যাঁ হ্যাঁ তুমি থাকো আর স্বপনের কাছে রান্না শেখো। দীপ্তি – ঠিক আছে। (#১৩) নিহারিকা ছেলে মেয়ে সৃজা আর মানসীকে নিয়ে চলে যায়।  দীপ্তি – চল স্বপনদা কি রান্না করবে দেখি স্বপন – রান্না করা আছে দীপ্তি – তবে নেহা যে বলে গেল তুমি রান্না করবে স্বপন – নেহা আমাদের দুজনকে একসাথে থাকার সময় দিয়ে গেল দীপ্তি – কেন ? স্বপন – আমরা দুজন খেলা করবো তাই দীপ্তি – যাঃ স্বপন – বলেছিলাম না আমরা নুঙ্কু নুঙ্কু খেলবো  এরপর দুজনে সেই আদিম খেলায় মেতে ওঠে।  ওদিকে সৃজারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।  সৃজা – এই দিকটা কি সুন্দর গো ! মানসী – হ্যাঁ খুব সুন্দর জায়গা। সৃজা – মনে হচ্ছে অনেকগুলো লেকের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি মানসী – এই সব জায়গা অনেক অনেক আগে গঙ্গা নদীর রাস্তা ছিল। এখন নদী সরে গিয়েছে আর এই নিচু জায়গা গুলো জলে ভরে লেকের মত তৈরি হয়েছে। এগুলোকে ভেরী বলে। সৃজা – এই সব তো আমরা ভূগোল বইতে পড়েছি। কিন্তু এই জায়গা বাড়ির এতো কাছে তা কোনদিন জানতাম না। নিহারিকা – আমি ওইসব ভূগোল জানি না। কিন্তু আমারও এখানে ঘুরতে ভাল লাগে। সৃজা – একদিন মানব কে নিয়ে আসবো। মানব ভূগোলের প্রোফেসর, কিন্তু আমার মনে হয় ও কখনও এই জায়গায় আসেনি।  ওরা প্রায় দু ঘণ্টা ঘুরে, রুবি হসপিটালের পাস থেকে গরম জিলাপি কিনে বাড়ি ফেরে। স্বপন আর দীপ্তির রান্না করা ততক্ষনে শেষ হয়ে গেছে। স্বপন আগের রাতে করা রান্না গুলো গরম করে সাজিয়ে রাখে। সৃজা – কি ছোট কাকি কি রান্না করলে দীপ্তি - মাছের ঝোল আর ভাত সৃজা – এতে আবার নতুন কি হল দীপ্তি – সব সময় যে নতুন কিছু হবে তার কোন মানে আছে ? স্বপন – রান্না ঘরে গিয়ে দেখে নে কি কি রান্না করেছি সৃজা রান্না ঘর থেকে ঘুরে আসে। সৃজা – বাপরে কত কি রান্না করেছো ! এইটুকু সময়ে এতো রান্না কি করে করলে ? নিহারিকা –কাল রাতে সব কিছু অর্ধেক করা ছিল। সৃজা – ছোট কাকি বাড়ি গিয়ে পরে আবার এই সব রান্না করে খাওয়াবে মানসী – ও রান্না করেছে নাকি সৃজা – তো এতক্ষন কাকি কি করছিল ? দীপ্তি – খেলা করছিলাম। এবার চান করে খেয়ে নাও। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবো। সৃজা – সবে তো ১২ টা বাজে আর জলখাবার তো একটু আগেই খেলাম। স্বপন – ঠিক আছে আয়, আমার পাশে বোস। গল্প করি। ওরা দুপুরে খেয়ে চলে যায়। বাড়ি ফিরেই সৃজা ঘর পরিস্কার করতে লাগে। লেখা – কি করছিস এখন ? সৃজা – বাবা নতুন মা আনবে, এই নোংরা ঘর ভাল লাগবে না। লেখা – সেদিন তো খুব আপত্তি ছিল, আজ কি হল ? সৃজা – আমরা সবাই স্বার্থপর জান লেখা – কে বলল ? সৃজা – আমরা কেউ বাবার সুখ বা আনন্দের কথা কোনদিন চিন্তা করিনি। দেখো না এবার কিরকম আনন্দ করি। লেখা – স্বপনের কাছ থেকে কি শুনে আসলি যে এত পরিবর্তন ? সৃজা – সে তোমরা ছোট কাকি আর রাঙ্গাপির কাছে শুনে নিও লেখা – তুই কি করবি ? সৃজা – কাল নতুন মা আসবে। মা ঘোরে আসলে আমি আর মা রঙ্গিলা সিনেমার গানের সাথে নাচবো। লেখা – বড়দা তোকে দেবে নাচতে ? সৃজা – বাবাকেও নাচাবো। (#১৪) পরদিন বড়দা রেজিস্ট্রি করে ব্রততীকে ঘরে নিয়ে আসেন। কোন অনুষ্ঠান করেননি। কোন বোন বা ভগ্নীপতিকেও ডাকেননি। বড়দা ব্রততীকে নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকতে দরজার কাছে যেতেই সৃজা ‘তনহা তনহা’ গান চালিয়ে দেয়। বড়দা – এটা আবার কি গান চালিয়েছ ? সৃজা – এখন আমি আর নতুন মা নাচবো এই গানের সাথে বড়দা – এইসব অসভ্যতা করার বুদ্ধি কে দিল ? সৃজা – দেখো বাবা এই একদিন তোমার পুরানো আইডিয়া ছাড়। তোমার সংস্কৃতি না কি সব বলো প্লীজ ভুলে যাও। কতদিন পরে একটা মা পেলাম, আজ একটু আনন্দ করতে দাও। বড়দা – আনন্দ করবে করো কিন্তু এইসব গান কেন ? সৃজা – এই রকম গান ছাড়া আনন্দ করা, নুন ছাড়া মাংস খাওয়ার মত। ব্রততী – মেয়ে চাইছে যখন একদিন তোমার ভাবনা ভুলে গিয়ে মেয়ের সাথে নাচো। বড়দা – আমি নাচবো ? ব্রততী – নাচলে কি হবে ? বড়দা – তুমি কি পাগল হলে ? সৃজা – বাবা আমি তো পাগল হয়েছি ততক্ষনে বড়দার দুই ভাই, মানসী, দীপ্তি আর লেখা মা কে নিয়ে ওখানে চলে আসে। গানের সাথে সৃজা নাচতে থাকে। একটু পরে সৃজা ব্রততীকে সাথে নাচে। একটু নাচার পরে ব্রততী সৃজাকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে। আবার নাচতে শুরু করে। দীপ্তিও নাচতে শুরু করে। মানসী আর লেখা লজ্জায় নাচে না। এরপর সৃজা ব্রততীকে ছেড়ে বাবার হাত ধরে। আর হাত ধরে নাচাতে থাকে। বড়দা চরম অস্বস্তিতেও মেয়ের ইচ্ছায় সায় দেন। একসময় গান শেষ হয়। বড়দা আর ব্রততী দুজনে মিলে মাকে প্রনাম করে। মা – সুখী হও মা। ছেলে পুলে নিয়ে সুখে সংসার করো। ব্রততী – মা আমার তো আর ছেলে মেয়ে হবার বয়েস নেই মা – তোমার ছেলে মেয়ে হবে না ! বড়দা – তোমার এক মেয়ে তো আছে ব্রততী – হ্যাঁ আমার ওই এক মেয়েই আছে। আর হবে না। মানসী – ওইসব কথা ছাড়। এখন দুজনে পাশাপাশি বস। আমরা একটু ভাল করে দেখি। তারপর সবাই একসাথে মিষ্টি খায়। বড়দা আর ব্রততী ঘরে ঢুকে যায়। সৃজা আর মানসী ওদের খাট ফুল দিয়ে সাজিয়ে রেখেছিল। এটাও বড়দা জানতেন না। মেয়ে আর বোনের কাজ দেখে বড়দা খুব আনন্দ পান।  বিয়ের কিছুদিন পরে দেখা যায় মা খুশী। বড়দার দুই ভাইয়ের সেরকম কোন মাথা ব্যাথা নেই। সৃজা দুদিন হই চই করে নিজের বাড়ি ফিরে গেছে। মানসীও খুব খুশী। শুধু দীপ্তি আর লেখা ঠিক খুশী না। ওদের অখুশির কারন হল ব্রততীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, আচার ব্যবহার, কথা বলার ধরণ সব কিছু।  দীপ্তি আর লেখা কোনোরকমে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছে। দেখতে একদম সাধারন। ওরা মানুষ হয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী ফ্যামিলিতে। সেখানে ব্রততী ইংরাজি আর বাংলা দুটোতেই এম.এ. পাশ। রবীন্দ্রনাথ আর সেক্সপিয়ার দুজনকে নিয়েই অনেক জ্ঞান। ওর ফ্যামিলি বেশ উচ্চ মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি। ব্রততীর চেহারা প্রায় সুস্মিতা সেনের মত। মুখ হয়ত সুস্মিতার মত অতো সুন্দর নয়। কিন্তু বেশ ভালো দেখতে। চলাফেরায় আর কথাবার্তায় একটা বেশ আভিজাত্য ফুতে ওঠে। দীপ্তি আর লেখা এটা ঠিক হজম করতে পারে না। ওরা ঠিক করে কথাই বলতে পারে না ব্রততীর সাথে। তারপর আবার ব্রততী রান্না বা ঘরের অন্যান্য কাজ সেভাবে করতে পারে না।  মানসীর কোন আসুবিধা হয় না। ওর বৌদিকে বেশ ভাল লাগে। ব্রততীরও মানসীকে ভাল লাগে। ব্রততীও ওকে ‘রাঙ্গাদি’ বলে ডাকলে মানসী আপত্তি করে। মানসী – না না তুমি আমাকে রাঙ্গাদি কেন বলবে ? ব্রততী – আমকে সবাই আম বলে, আপেলকেও সবাই আপেল বলে। তবে রাঙ্গাদিকে রাঙ্গাদি কেন বলবো না ? মানসী – আমি তোমার থেকে ছোট বৌদি ? ব্রততী – ছোট বড়র প্রশ্ন আসছেনা ভাই।  মানসী – আর আমি তো আম বা আপেল নই। আমিতো কালোজাম। ব্রততী – কালোজাম না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু কালোজাম খুবই সুন্দর দেখতে। খেতেও ভাল। আমার রাঙ্গাদি দেখতে কেমন সেটা আমি বুঝতে পারছি। খেতে কিরকম সেটা তোমার ভাস্কর বলতে পারবে।  মানসী – আমার ভাস্কর কে ? ব্রততী – রাঙ্গাদি আমি সব জানি। তোমার বড়দা সবই বলেছে আমায়। মানসী কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে। ব্রততী – চিন্তা করোনা রাঙ্গাদি। আমি তোমার আর ভাস্করের বিয়ের ব্যবস্থা করবো। মানসী কেঁদে ফেলে। ব্রততীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। ব্রততী মানসীর মাথায় হাত রাখে। বড়দা মানুষ যেরকমই হোক, বৌ জোগাড় করতে ভাল পারে। মানসী অনেকদিন পরে ওর সুলগ্না বৌদির ছোঁয়া পায়।
Parent