জামাই আদর_Written By Lekhak (লেখক) [৭ম খন্ড (চ্যাপ্টার ১৯ - চ্যাপ্টার ২০)]

🔗 Original Chapter Link: https://chotiheaven.blogspot.com/2014/05/written-by-lekhak_8201.html

🕰️ Posted on May 25, 2014 by ✍️ Lekhak

📖 558 words / 3 min read


Parent
জামাই আদর Written By Lekhak (লেখক) ।।উনিশ।। এই ঘটনার দুদিন পর..... কলকাতায় নিজের বাড়ীতে বসার ঘরে বসেছিল সুনীল। মনীষা ঢুকলো চায়ের কাপ হাতে নিয়ে। বিষন্ন মুখ নিয়ে মনীষার দিকে একবার তাকালো সুনীল। পাশে বসে সুনীলের গালে হাত রেখে মনীষা বলল, "আমি তো তোমাকে ক্ষমা করেই দিয়েছি। তবে কেন এত মন খারাপ করে বসে আছ?" সুনীল জবাব দিতে পারছিল না মনীষার কথা। আসল সত্যিটা জেনেছে মনীষার মুখ থেকে কলকাতায় ফেরার পরে। তবুও যেন অপরাধের গ্লানি ওর পিছু ছাড়ছে না। মনীষাকে একবার শুধু বলল, "মনি তোমার মা এরকম? আমি নিজেই নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। স্বয়ং ভগবানও আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না। আমি কি ভুলই করে এলাম।" যা ঘটেছে, তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সারাজীবন ধরে অনুশোচনা করে যেতে হবে। তবুও মনীষা বলল, "যা হয়েছে ভুলে যাও। আমিও মনে রাখছি না এমন কথা।" সুনীলের চুলে হাত রেখে বলল, "বাবা ফোন করেছিল একটু আগে। বলেছে, তোর মাকে আমি ডিভোর্স দিচ্ছি আর কয়েকদিন পরেই। আমার আর ওর প্রতি কোন দরদ নেই। শেষ পর্যন্ত সর্বনাশটা তোর সাথেই করল? শোধ তোলার এটাই কি কায়দা? ছি ছি ছি শেষকালে কিনা জামাইয়ের সঙ্গে? " সুনীল কথাটা শুনে মুখ নিচু করল। মনীষা তখনও ওকে সান্তনা দিয়ে যেতে লাগল। ভাগ্যভাল পরের দিনের খবরের কাগজে হেডলাইন হয়ে বেরোয়নি খবরটা। মিডিয়া তো এখন যেখানে সেখানে ধাওয়া করে। খবরের কাগজে প্রথম পাতায় সুনীলের একখানা ছবি বেরোলে কি কেলেঙ্কারীই না ঘটত। মান সন্মান সব তো যেতই। সমাজে মুখ দেখানোও পাপ হয়ে যেত। ভাগ্যিস মনীষা আর মনীষার বাপী দুজনেই ক্ষমা করে দিয়েছে সুনীলকে। শাশুড়ীর এমন আচরণে ওরা দুজনেই বিস্মিত। কিন্তু কারনটা মনীষাই খুলে বলেছে সুনীলকে। বিয়ের সময় পাত্র পাত্রীকূলের অনেক ঘটনাই গোপণ রাখা হয়, যা জানতে পারা যায় পরে। সুনীল যখন জানতে পেরেছে, তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। শাশুড়ী তার মনোস্কামনা পূর্ণ করে নিয়েছেন জামাই আদরের মাধ্যমে। আসল ঘটনা হচ্ছে মনীষা জন্মাবার পরেই মনীষার আসল মা মারা যান। বাবা মেয়ে অন্ত প্রাণ। কিন্তু তিনি মোক্ষম ভুলটা করলেন, দ্বিতীয়বার আবার বিয়ে করে। উদ্দেশ্য এই মা হারা মেয়েটিকে যদি তার নতুন মা মানুষ করে। মনীষার সৎ মা মনীষার মতই সুন্দরী। বাপের অনেক পয়সা আছে দেখেই মনীষার বাবাকে বিয়ে করেন। কিন্তু ওনার কপালে স্বামী আর প্রথম পক্ষের মেয়ে জুটলেও জোটেনি স্বামীর দেহভালবাসা। এর জন্য মনীষার বাবা অনেকটাই দায়ী। আমার যেহেতু পূর্বপক্ষের একটি মেয়ে আছে, এবং মেয়েকে মানুষ করাই নতুন বউয়ের ধ্যানজ্ঞান, এই বলে দ্বিতীয় স্ত্রীকে রাজী করিয়েও, শেষ রক্ষাটা উনি করতে পারলেন না। দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে আবার নতুন সন্তান আসুক, সেটা উনি চান নি। মেয়ে মানুষ করার জন্য অমন সুন্দরী বউ না জোটালেও পারতেন। শাশুড়ী তিলে তিলে ব্যাপারটা সহ্য করেও বদলা নেবার মানসিকতাটা তৈরী করেছিলেন মনে মনে। ছোটবেলা থেকেই মনীষাকে মানুষ করেছেন, কিন্তু বুঝতে দেন নি কিছু। মেয়ের কাছে ভাল হয়েছেন, স্বামীর কাছেও। কিন্তু ওনার মনে ছিল প্রতিহিংসা। মেয়ের বিয়ে দিয়ে জামাইকে পেয়ে সেটা ভাল করে মিটিয়েও নিলেন। একপ্রকার জামাই আদরের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত জামাইকেই উনি বধ করলেন। সুনীল জিজ্ঞেস করেছিল মনীষাকে। - "আচ্ছা তোমার মায়ের ঔ মৃগী হওয়ার ঘটনাটা কি সত্যি?" মনীষা বলেছিল, "একদমই নয়। ওটা মা অভিনয় করেছে তোমার সাথে। যাতে তুমি কিছু বুঝতে না পারো।"  -- "আর তোমার বাপীর দ্বিতীয় বিবাহর ব্যাপারটা।"  - "রাজস্থানে না গিয়ে চরম ক্ষতি হয়েছে বাপীর। ওসব বিয়ে ফিয়ে ফালতু। দু-দুটো বিয়ে করেছে যে লোকটা। সে আবার তৃতীয় বিবাহ করতে যাবে কেন? সবই যে মায়ের মন গড়া ফন্দী।" ।।বিশ।। বিয়ের দুবছর পরেও সুনীল এখনও স্বপ্নে দেখে মনীষার মাকে। ঐ পাশের ঘর থেকে ডাকছে, "সুনীল একটু আমার ঘরে আসবে?!" স্বপ্নটা দেখে মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙে যায় সুনীলের। আর হ্যাঁ। মনীষার বাপী আর ওর সুন্দরী মায়ের ডিভোর্সটা এখন হয়ে গেছে। সমাপ্ত
Parent